Ratan Tata Death News:৮৬ বছর বয়সে মুম্বাইতে প্রয়াণ, শোকের ছায়া দেশজুড়ে

Ratan Tata Death News:৮৬ বছর বয়সে মুম্বাইতে প্রয়াণ, শোকের ছায়া দেশজুড়ে

ভারতবর্ষের অন্যতম বিশিষ্ট শিল্পপতি রাতান টাটা আর নেই। ৮৬ বছর বয়সে মুম্বাইয়ের ব্রীচ ক্যান্ডি হাসপাতালে বুধবার সন্ধ্যায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বেশ কয়েকদিন ধরেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন।

বুধবার বিকেলের দিকে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ার খবর আসে। এর কিছু ঘণ্টা পরেই তাঁর মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে। এই খবর ভারতবাসীর জন্য এক বিরাট ধাক্কা, কারণ রাতান টাটার অবদান দেশ কখনোই ভুলতে পারবে না।

টাটা গ্রুপের উত্থানে রাতান টাটার অবদান টাটা গ্রুপকে আন্তর্জাতিক মহলে পৌঁছে দেওয়ার অন্যতম কারিগর ছিলেন রাতান টাটা। তিনি নিজের ব্যবসায়িক দক্ষতা ও মানবিকতায় বারবার প্রমাণ করেছেন যে তিনি শুধুমাত্র একজন সফল ব্যবসায়ীই নন, বরং একজন উদার মনের মানুষও। দেশের সংকটময় মুহূর্তে তাঁকে সর্বদাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে দেখা গেছে।

Ratan Tata Death News:৮৬ বছর বয়সে মুম্বাইতে প্রয়াণ, শোকের ছায়া দেশজুড়ে

মাত্র দু’দিন আগে বলেছিলেন, “আমি ঠিক আছি” সোমবারেও তাঁর অসুস্থতার খবর রটেছিল। কিন্তু সেই সময় রাতান টাটার নিজস্ব এক্স (পূর্বে টুইটার) হ্যান্ডেল থেকে একটি পোস্ট শেয়ার করা হয়েছিল। সেখানে তিনি জানান, “আমার শারীরিক অবস্থার জন্য চিন্তা করার প্রয়োজন নেই, আমি পুরোপুরি সুস্থ। আমি কেবল রুটিন চেকআপের জন্য হাসপাতালে এসেছি।” কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, এইবার তিনি হাসপাতালে ফেরেননি, বরং চিরবিদায় নিয়ে শেষ যাত্রায় পাড়ি দেন।

জন্ম ও কর্মজীবন রাতান টাটার জন্ম ১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর। তিনি ১৯৯১ থেকে ২০১২ পর্যন্ত টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করেন এবং এই সময়ে তিনি দেশকে একাধিক ব্যবসায়িক কীর্তিতে শীর্ষে নিয়ে যান। তাঁর যোগ্য নেতৃত্বেই টাটা গ্রুপ দেশের অন্যতম সেরা কর্পোরেট হাউসে পরিণত হয়।

১৯৯১ সালে, মাত্র ২১ বছর বয়সে, রাতান টাটা টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। তাঁর দক্ষতা ও প্রজ্ঞায় টাটা স্টিল, টাটা মোটরস এবং অন্যান্য প্রধান ব্যবসাগুলি বৈশ্বিক বাজারে প্রসার লাভ করে। বিশেষত, ২০০৪ সালে টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (TCS) বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া টাটা গ্রুপের এক বড়ো পদক্ষেপ ছিল।

ব্যবসার আগে কর্মী হিসেবে কাজ চেয়ারম্যান হওয়ার আগে, রাতান টাটা টাটা স্টিলের সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। তিনি কর্মচারীদের সাথে মাটির কাছাকাছি থেকে কাজ করে ব্যবসার খুঁটিনাটি বিষয়গুলি শিখেছিলেন। এরপর ১৯৯১ সালে টাটা গ্রুপের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং দক্ষ নেতৃত্বে গোষ্ঠীকে বিশ্বব্যাপী প্রসারিত করেন।

প্রেরণাদায়ক ব্যক্তিত্ব শুধুমাত্র একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে নয়, একজন মানবদরদী, উদার এবং সাদাসিধে মানুষ হিসেবে রাতান টাটা সকলের প্রেরণা হয়ে থাকবেন। টাটা গ্রুপের কর্মীদের তিনি নিজের পরিবারের সদস্যের মতো দেখতেন। তাদের স্বার্থ রক্ষায় সর্বদা সচেষ্ট থাকতেন। বিশেষ করে তাঁর পশুপ্রেমের জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন। বিশেষ করে, পথকুকুরদের প্রতি তাঁর আলাদা একটি মমত্ববোধ ছিল। তিনি বিভিন্ন পশু সংস্থার জন্য নিয়মিত অনুদান দিতেন। এছাড়াও জাতীয় বিপর্যয়ের সময়েও তিনি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিতেন, যেমন ২৬/১১ মুম্বাই হামলা কিংবা কোভিড মহামারীর সময় তাঁর উদ্যোগ ছিল অতুলনীয়।

রাতান টাটার জীবন ও কাজের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে তিনি শুধুমাত্র একজন সফল শিল্পপতি ছিলেন না, বরং একজন প্রকৃত মানবিক মানুষও ছিলেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top